Site icon Healthwealthbridge

Neck pain Myofascial pain by Renowned Physiotherapist Debapriya Mukherjee

By Ms Debapriya Mukherjee

BPT,MPT Rehabilitation

কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজনে একটি লেখা, যা সকলের জন্য। আশা করি কিছু বন্ধুদের উপকারে লাগবে।

Neck pain and myofascial pain syndrome…

ঘাড়ে, কাঁধে এবং পিঠে ব্যাথা একটি অত্যন্ত সার্বজনীন সমস্যা।
দু – ধরনের কর্মরত মানুষের মধ্যেই এই সমস্যা দেখা যায়। যারা সারা দিন ভারী/ হালকা জিনিস নিয়ে তোলা/ নামানো অথবা নাড়া চাড়া করেন ( physical labour worker / homemaker etc)…
আবার যাদের দিনের বেশিরভাগ সময় computer এর সামনে বসে থাকতে হয়, তাদেরও এই একই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আমাদের কাছে এই দু – ধরনের রোগী ই আসেন।
আরেকটি ধরনের রোগী আছেন যারা শারীরিক ভাবে অসুস্থ্য (অন্য কোন রোগের কারণে) / অপটু, যারা চলাফেরা বা অন্যান্য কাজ করতে খুব একটা পারেন না, মূলত শুয়ে বসে দিনযাপন করেন ( বয়স্ক মানুষ), তারাও এই ব্যথা থেকে রেহাই পান না।
যদিও, এই তিন ধরনের রোগীর কাজের / দিনযাপনের পদ্ধতি বিভিন্ন, কিন্তু বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, এদের শরীরে এই ব্যথার উৎস্য টি একেবারে একই।

এবার আসা যাক রোগীরা আজকাল কি ভাবেন/ কি বলেন…  আজকাল technology র যুগে সমস্ত information ই মানুষের হাতের মুঠোয়। সেই সুবিধার জন্যই হোক অথবা অন্য কোন কারণেই হোক, আজকাল ৯০% রোগী এসে বলেন, “ম্যাডাম, ঘাড়ে ব্যথা। ওই স্পন্ডিলাইটিস হয়েছে।”
এই স্পন্ডিলাইটিস term টি একটু বিশদ ভাবে জানা দরকার….
এই ধরনের ব্যথা সম্পর্কিত চিকিৎসা শাস্ত্রে এই ধরনের চারটি terminology রয়েছে।
1. Spondylosis (স্পন্ডাইলোসিস)
2. Spondylitis ( স্পন্ডিলাইটিস)
3. Spondylolysis ( স্পন্ডাইলোলাইসিস )
4. Spondylolisthesis ( স্পন্ডাইলোলিস্থেসিস )

1. spondylosis – এটি সবচেয়ে common একটি বয়স জনিত স্বাভাবিক ক্ষয়। ঠিক যেমন একটি বয়সের পরে আপনার একটি একটি করে চুল পাকবে, ঠিক তেমনই শরীরের সমস্ত অংশ ধীরে ধীরে ক্ষয় হবে। এবার কথা হলো, হঠাৎ ৩৫ বছর বয়সে একদিন সকালে উঠে যদি আবিষ্কার করেন, আপনার একটি চুল পাকা, আপনি কি করবেন? বেশিরভাগ মানুষ পরিপাটি করে সেটাকে অন্য কালো চুলের নীচে ঢেকে দেবেন তাই তো? কারণ এখনই ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার নেই। ঠিক তেমনই প্রত্যেক দিন আপনার শরীরের প্রত্যেকটি অংশ একটু একটু করে ক্ষয় হচ্ছে, তার মধ্যে হাড়ও আছে, তাই নিয়ে খুব উতলা হওয়ার দরকার নেই। রোজ সামান্য ব্যায়াম, নিজের শরীরকে সচল রাখার জন্য হালকা কিছু কাজ, হাঁটা এবং সঠিক ও সুষম খাদ্যাভ্যাস এই বয়সজনিত ক্ষয় কে পিছিয়ে দিতে পারে।

কিন্তু এই সময়ে আর একটি সমস্যা দেখা যায়।ব্যথার জন্য xray করতে গেলে যে report টি আসে, তাতে অনেকসময় লেখা থাকে ‘Early degenerative changes’… সেটি নিয়ে অনেকে মাথা খারাপ করেন। সেটি লেখা থাকে কারণ আপনার বয়স জনিত যে সামান্য ক্ষয় গুলো হয়েছে, সেগুলি হাড়ের ছবিতে দেখা যাচ্ছে। এখন প্রশ্ন হলো, আপনার ব্যথা কি এই সামান্য বয়সজনিত হাড়ের পরিবর্তনকে justify করছে? সেটা খুব ভালো ভাবে correlate করে দেখা উচিৎ। আর, একটা ভালো দিক হলো, এটি ছাড়া অন্য কোনো খারাপ চিহ্ন সম্ভবতঃ আপনার হাড়ে দেখা যাচ্ছে না।

এবার কথা হলো এই spondylosis অথবা বয়স জনিত ক্ষয় ঠিক কতটা হলে আপনার উতলা হওয়া বাঞ্ছনীয়। আপনার x-ray report এ যদি early changes ছাড়া আরো বেশ কিছু কথা, যেমন – joint space reduction, projecting osteophytes ইত্যাদি লেখা থাকে, তাহলে ব্যাপারটি কিছুটা গুরুতর দিকে যাচ্ছে।

একটি alarming symptom হলো, আপনার ঘাড়ের movement করার সময় যদি ঘাড়ের বর্তমান ব্যথা তীব্রতর হয় এবং সেটি হাতে, কাঁধে অথবা মাথায় ছড়িয়ে পরে ( ইলেকট্রিক শকের মত), তবে আপনার এক্ষুণি ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার ও চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন।

2. Spondylitis – এটি খুব rare একটি সমস্যা। সারা পৃথিবীতে মোটামুটি 0.1 – 1.4 % মানুষের মধ্যে এই সমস্যাটি দেখা যায়। যদিও ভুলবশত এই terminology টি বহুল প্রচলিত, কিন্তু সমস্যাটি অতটা প্রচলিত নয়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ শিরদাঁড়ার রোগ যাতে তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। এই ব্যথা শুধু যে movement এর সময় হবে তাই নয়, এমনকি যখন আপনি rest নিচ্ছেন তখনও হতে পারে। ঠিকঠাক diagnosis এবং চিকিৎসা হলে এই রোগকে অনেকটাই প্রশমিত করা সম্ভব হয়। উল্টোদিকে এই রোগের ঠিকঠাক চিকিৎসা সময়মতো না হলে রোগীর functionality limited হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে।

3. Spondylolysis – এটি শিরদাঁড়ার মধ্যে একটি/ দুটি ছোট্ট হাড়ের ভেঙে যাওয়া বোঝায়। সাধারণ ভাবে শরীরের যে কোনো অংশের হাড় ভাঙা ঠিক যতটা গুরুত্বপূর্ণ ও ভয়ের, এটি তার থেকে কিছুটা বেশি। তীব্র ব্যথা ও movement করতে না পারা এর চিহ্ন। Xray র মাধ্যমে সঠিক diagnosis ও অবিলম্বে চিকিৎসা এই রোগে প্রয়োজন। আপনি যদি এই রোগে আক্রান্ত হন, ঘাড়ের কিছু কিছু movement আপনার সারা জীবনের জন্য বন্ধ হতে পারে। সেটি মেনে চললে এই সমস্যা কে অনেকটাই বাগে আনা যায়।

4. Spondylolisthesis – এটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ একটি সমস্যা, যেখানে শিরদাঁড়ার একটি হাড় অন্য হাড়ের ওপর সরে যায় (displaced)। ঘাড়ের তুলনায় এই সমস্যা কোমরের হাড়ে বেশি দেখা যায়। এই সরে যাওয়া/ displacement খুব বেশী হলে এই ক্ষেত্রে operation ও প্রয়োজন হতে পারে।

একেবারে প্রথম যে ব্যথার উৎসের কথা বলেছিলাম, এবার আসবো সেই কথায়। হাড়ের বেশ কয়েকটি সমস্যার কথা সহজে বলার পরে আশা করি এটুকু বোঝা গেছে যে এই সমস্যা গুলো বেশ গুরুতর… আমাদের চারপাশে প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনের প্রায়ই যে ‘ ঘাড়ে/ কাঁধে ব্যথা ‘ দেখা যায় সেগুলো একটু ভিন্ন। সেগুলোর উৎস হলো মূলত মাংসপেশী।
মাংসপেশী আমাদের শরীরের দুটি ভার বহন করে। এক, আমাদের সমস্ত movements করে। দুই, বেশ কিছু মাংসপেশী আমাদের শরীরের খাড়া ( দাঁড়ানো/ বসার সময়) posture বজায় রাখতে সাহায্য করে। আমাদের ঘাড়ের মাংসপেশী গুলিকে এই দুটি কাজই করতে হয়। এক্ষেত্রে বলে রাখি যারা শুয়ে বসে দিন কাটান তারাও সারা দিনে 623 – 1378 বার ঘাড়ের movement করেন। এমন কি আমরা ঘুমের মধ্যেও 87 – 250 বার ঘাড়ের movement করে থাকি।

মাংসপেশী তে চোট দুভাবে হতে পারে। হঠাৎ কোনো হ্যাঁচকা টান লাগতে পারে ( ভারী জিনিস তোলার সময় / বাসে ট্রেনে চলাচল করতে গিয়ে)। আবার খুব ছোট ছোট trauma accumulate করতে পারে। যেমন একটি কম ভারী bag একই কাঁধে দীর্ঘ সময়ের জন্য দীর্ঘদিন ধরে বহন করা। আবার দীর্ঘদিন ধরে ভুল posture- এ বসা বা শোয়ার জন্যও এই micro trauma accumulated হয়।
মাংসপেশী তে কোনোরকম চোট লাগলে (ছোট / বড়) তা জেদী একগুঁয়ে বাচ্চাদের মত সিঁটিয়ে / কুঁকড়ে যায়। যাকে আমরা spasm বলে থাকি। জেদী বাচ্চারা রেগে গেলে যেমন খায় না, ঠিক তেমনি এই কুঁকড়ে থাকা মাংসপেশী ও খায় না, অর্থাৎ এদের সঠিক পুষ্টির জন্য যে পরিমাণ রক্তসঞ্চালন প্রয়োজন তা পুরোটা হয় না। তখন এই মাংসপেশী গুলির মধ্যে কয়েকটি বিশেষ জায়গায় ডেলা/ গিঁট পাকিয়ে যায়, যাকে nodules বলে। এগুলোই ব্যথার প্রধান উৎস। প্রথম প্রথম এই nodules গুলি শুধুমাত্র চাপ দিলে/ টান পড়লে ব্যথা হয়। কিন্তু বেশী দিন স্থায়ী হলে এগুলি অনবরত ব্যথা হয় এবং সেই ব্যথাটি একটি বিশেষ মানচিত্র অনুযায়ী ছড়ায়, যেটি এই nodule এর position এর ওপর নির্ভর করে। খুব বাড়াবাড়ি অবস্থায় এটি মাথা ঝিমঝিম করা, হঠাৎ মাথা ঘোরা, বমি পাওয়া, গায়ে কাঁটা দেওয়া, এই ধরনের symptoms ও তৈরী করতে পারে।

এই সমস্যার সমাধানের জন্য প্রথমেই যেটা প্রয়োজন তা হলো যে রাগী বাচ্চা রাগ করে খায়নি, তাকে ভালবেসে আদর করে খাওয়ানো। অর্থাৎ, যে কোনো উপায়েই হোক মাংসপেশীর মধ্যে রক্তসঞ্চালন বাড়ানো/ স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা। তার জন্য –
1. যে micro-trauma accumulation এর জন্য ঘটনাটি ঘটেছে সেটিকে সরানো অত্যন্ত প্রয়োজন। কোন ভারী জিনিস না তোলা, কাঁধে ব্যাগ বহন না করা এবং ঘাড় ও কাঁধ কে 3-7 দিনের জন্য সম্পূর্ণ rest দেওয়া এগুলি করা যেতে পারে।
2. রাত্রে শোয়ার সময় পাতলা বালিশ ব্যবহার করা ও তার সাথে একটি ‘neck – roll’ ( তোয়ালে roll করে ঘাড়ের নীচে support দেওয়া) ব্যবহার করা যেতে পারে।
3. গরম সেঁক নেওয়া যেতে পারে। এতে মাংসপেশীতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে।
4. ঘাড়ে ব্যথা থাকার স্বত্ত্বেও যেটুকু movement সম্ভব হচ্ছে, সেটুকু খুব ধীর গতিতে চালিয়ে যাওয়া যেতে পারে।
5. সামান্য ব্যায়াম, মূলত stretching exercises ( guided & under supervision) করা যেতে পারে।
যদি অসুবিধা খুব সামান্য হয় এবং প্রাথমিক অবস্থাতেই চিকিৎসা শুরু হয়, তাহলে এইটুকু করলেই সাত দিনের মধ্যে উপকার পাওয়া যায়। কিন্তু সমস্যা কিছুটা বাড়াবাড়ি হলে সরাসরি ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয়। এক্ষেত্রে muscle relaxant জাতীয় ওষুধ দিয়ে, বিভিন্ন modalities ব্যবহার করে অথবা dry needling এর মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়।

মাংসপেশী র ব্যথায় যারা ভুগছেন তাদের জন্য একটি সুখকর তথ্য হলো, সঠিক চিকিৎসায় এই ব্যথাটি সম্পূর্ণ সেরে যায় এবং সঠিক ব্যায়াম ও জীবনধারা বজায় রাখলে এটিকে বারবার হওয়া থেকে আটকানোও যায়।

ধন্যবাদ।

Exit mobile version